• Digital Marketing and SEO Services in Piracicaba
  • Boost Your Business with SEO and Web Development
  • Effective Online Marketing Strategies to Grow Your Brand
  • Top SEO Services to Enhance Your Website Ranking
  • Grow Your Business with Tailored Digital Marketing Campaigns
  • Responsive Web Design and Development for Better User Experience
  • Maximize ROI with Effective PPC and SEO Campaigns
  • Increase Your Sales with Expert E-commerce SEO Strategies
  • Build a Strong Brand Presence with Effective Marketing
  • Drive Traffic with High-Quality SEO Content Marketing
  • Engage and Grow Your Audience with Social Media Marketing
  • Get Custom Web Solutions that Fit Your Business Needs
  • Enhance Your Local Presence with Local SEO Services
  • Manage Your Online Reputation with SEO Strategies
  • Get an In-Depth SEO Audit to Improve Your Website Performance
  • News Details
    Facebook Youtube Twitter LinkedIn
    ...
    চাকরির বাজারে হাহাকার

    রাজধানীর মিরপুরের পূরবী সিনেমা হলের অপর প্রান্তে প্রতিদিনই সকালে বসে শ্রমিকের হাট। কাজের জন্য শ্রমিকরা এখানে জড়ো হন। আর চাহিদা অনুসারে এখান থেকে বিভিন্ন নির্মাণকাজ, বাসা এবং অন্যান্য কাজের জন্য শ্রমিক নিয়ে যায় আগ্রহীরা। এভাবে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় ২০টিরও বেশি ভাসমান শ্রমবাজার রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে এসব বাজারে শ্রমিকের সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু কাজ কম। এটা তো দিনমজুরের চিত্র। এভাবে বাড়ছে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দেশে শিল্প খাতে নতুন বিনিয়োগ নেই। ফলে কর্মসংস্থান বাড়ছে না। সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
    জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, গত কয়েক বছরে দেশের অর্থনীতির অন্যতম সমস্যা ছিল বিনিয়োগের অভাব। তাই দেশে নতুন কর্মসংস্থান বাড়েনি। ফলে বেকার বেড়েছে। তার মতে, প্রতিবছর দেশে ২০ লাখের বেশি লোক শ্রমবাজারে আসছে। আর এই হারে কর্মসংস্থান তৈরি না হলে বেকার বাড়বে। তিনি বলেন, বিনিয়োগের সঙ্গে অনেক বিষয় জড়িত। বিশেষ করে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি এবং মাথাপিছু আয় বিনিয়োগের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়। ফলে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ ছাড়া অন্য সূচকগুলো বাড়লে ওই বৃদ্ধির বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। তিনি বলেন, ৮০ শতাংশ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় বেসরকারি বিনিয়োগের মাধ্যমে। ফলে এই খাতে বিনিয়োগ না বাড়লে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির কথা নয়।
    আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সংজ্ঞা অনুযায়ী চার সপ্তাহ কাজ খুঁজেছে অথচ পায়নি, কিন্তু আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে কাজ পেতে পারে বা আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই বিদ্যমান মজুরিতে কাজ শুরু করবে- এমন মানুষকে বেকার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) দেশের শ্রমশক্তির যে জরিপ করেছে, তা এই সংজ্ঞার ওপর ভিত্তি করেই। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) তথ্য অনুসারে প্রতিবছর ২০ লাখ লোক শ্রমবাজারে আসছে। কিন্তু গত তিন বছরে কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে মাত্র ১২ লাখ। আর এই কর্মসংস্থানও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে। কৃষিতে কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। ব্রিটিশ পত্রিকা ইকোনমিস্টের ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) এক বিশেষ প্রতিবেদন অনুসারে বর্তমানে বিশ্বে ২০টি সর্বাধিক বেকারত্বের দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২। ওই প্রতিবেদন অনুসারে বর্তমানে বাংলাদেশে শিক্ষিত বেকারের হার সবচেয়ে বেশি। প্রতি ১০০ স্নাতক ডিগ্রিধারী তরুণ-তরুণীর মধ্যে ৪৭ জন বেকার। বিবিএস বলছে, বেকারদের মধ্যে চিকিৎসক-প্রকৌশলীর হার ১৪ দশমিক ২৭ শতাংশ। নারী চিকিৎসক-প্রকৌশলীর মধ্যে বেকারত্বের হার প্রায় ৩১ শতাংশ। এরপরই আছেন উচ্চমাধ্যমিক ডিগ্রিধারীরা। তাদের ক্ষেত্রে বেকারত্বের হার ১৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
    বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুসারে দেশে মোট কর্ম উপযোগী মানুষের সংখ্যা ১০ কোটি ৯১ লাখ। এর মধ্যে কর্মে নিয়োজিত রয়েছেন ৬ কোটি ৮ লাখ মানুষ। যারা কর্মে আছেন, তাদের মধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে নিয়োজিত রয়েছেন ২ কোটি ৪৭ লাখ, শিল্পে ১ কোটি ২৪ লাখ এবং সেবা ক্ষেত্রে যুক্ত রয়েছেন ২ কোটি ৩৭ লাখ মানুষ। আর পুরোপুরি বেকার রয়েছেন ২৬ লাখ ৮০ হাজার, যা মোট শ্রমশক্তির ২ শতাংশ। আর শ্রমশক্তির বাইরে ৪ কোটি ৫৬ লাখ মানুষ, যা মোট শ্রমশক্তির ৪২ শতাংশ। এছাড়া যারা শ্রমশক্তির বাইরে রয়েছেন, তাদের মধ্যে নারীর সংখ্যা ৩ কোটি ৫০ লাখ আর পুরুষ ১ কোটি ৬ লাখ। অন্যদিকে শহরের চেয়ে গ্রামে এ হার অনেক বেশি। গ্রামে শ্রমশক্তির বাইরে থাকা মানুষ ৩ কোটি ১৪ লাখ আর শহরে ১ কোটি ৪২ লাখ। এই অংশটি কোনো কাজে যুক্ত না থাকলেও বিবিএসের হিসেবে তারা বেকার নয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, এরাও বেকার।
    এর আগের অর্থবছরে (২০১৫-১৬) কর্মে নিয়োজিত মানুষের এ সংখ্যা ছিল ৪ কোটি ৬৬ লাখ। এর মধ্যে শ্রমশক্তির বাইরে ছিল ৪ কোটি ৪০ লাখ এবং একেবারেই বেকার ছিল ২৬ লাখ। তুলনামূলক পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এরকম কর্মহীন মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। অন্যদিকে খণ্ডকালীন (সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টার কম কাজ করে) বেকার রয়েছে ১৪ লাখ ৬৫ হাজার। সম্প্রতি শ্রমশক্তি জরিপ ২০১৬-১৭ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে সংস্থাটি। প্রবৃদ্ধির সঙ্গে কর্মসংস্থান না হওয়া, বেসরকারি বিনিয়োগ তলানিতে থাকা, সরকারি বিনিয়োগের কার্যকর ব্যবহার না হওয়াসহ নানা কারণে দেশে কর্মসংস্থান হচ্ছে না। ফলে বাড়ছে বেকার সংখ্যা।
    সরকারি হিসাবে সপ্তাহে যারা ১ ঘণ্টা কাজ করেন (মূল্য পরিশোধ হোক বা না হোক), তারা কর্মে নিয়োজিত। তাছাড়া যারা এক সপ্তাহের মধ্যে কোনো কাজ খোঁজেননি, তারা শ্রমশক্তির বাইরে। বিবিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সম্ভাব্য শ্রমশক্তি তৈরি হয়েছে প্রায় ২৪ লাখ ৩৪ হাজার। এর মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ৮ লাখ ৪৬ হাজার আর নারীর সংখ্যা ১৫ লাখ ৮৭ হাজার। এছাড়া গ্রামে সম্ভাব্য শ্রমশক্তি তৈরি হয়েছে ১৫ লাখ ৯৪ হাজার। আর শহরে হয়েছে ৮ লাখ ৪০ হাজার।
    বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বলছে, একদিকে দেশে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে, অপরদিকে বিভিন্ন কোম্পানিও দক্ষ জনবল পাচ্ছে না। এর মানে হল, শিক্ষিতের হার বাড়লেও তাদের দক্ষতার অভাব রয়েছে। বিশেষ করে গার্মেন্ট খাতের বিভিন্ন কোম্পানিতে মধ্যম সারির কর্মকর্তাদের নিয়োগের জন্য দেশে দক্ষ জনবল পাওয়া যাচ্ছে না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এদের ভারত, শ্রীলংকাসহ অন্যান্য দেশ থেকে নিয়োগ দিতে হচ্ছে। ফলে প্রতিবছর প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। এ কারণে জনশক্তিদের দক্ষতা বাড়াতে নজর দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারেও দক্ষ জনবল তৈরির প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। সরকারের সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায়ও ছিল এ ধরনের কর্মসূচি। কিন্তু বাস্তবায়ন তার ধারেকাছেও নেই।